Pages

০৩ আগস্ট ২০২২

ঈশ উপনিষদের শ্লোকের অনুবাদ


 

ঈশ উপনিষদের মোট আঠেরোটি স্লোক। কবি যতীন্দ্র প্রসাদ ভট্টাচার্য্য প্রথম এগারোটি স্লোকের কাব্য অনুবাদ করেছেন। সহজ ভাবে তুলে ধরেছেন ঋষিদের মহামূল্যবান এইসব স্লোকের মর্মার্থ- যা আমাদের জীবন যাপনের জন্য অতি প্রয়োজনীয়।

১১

বিদ্যাং অবিদ্যাং যস্তদ্বেদ উভয়ং সহ।

অবিদ্যয়া মৃত্যং তীর্ত্বা বিদ্যয়া অমৃতম্ অশ্নূতে।।

 

জ্ঞান কর্ম উভয়কে যেবা একসাথে জানে ধ্যানে,

কর্মে মৃত্যু অতিক্রমিয়া অমৃতকে পায় জ্ঞানে।



১০

অন্যদেবাহূর্বিদ্যয়াহন্যদাহূরবিদ্যয়া।

ইতি শুশ্রুম ধীরাণাং যে নস্তদ্বিচচক্ষিরে।।

 আমাদের কাছে এসব ব্যাখ্যা করেছেন যাঁরা,

বিদ্যা বিদ্যে পৃথক পৃথক ফল হয় কন তাঁরা।

 

 

অন্ধং তমঃ প্রবিশন্তি যেহবিদ্যামুপাশতে।

ততো ভূয় ইব তে তমো বিদ্যায়াং রতাঃ।।

 যারা অবিদ্যা উপাসনা করে,পশে তারা গাঢ় তমে,

শুধু বিদ্যাকে করি উপাসনা পশে ততোধিক ভ্রমে।

 

পর্যগাৎ শুক্রমকায়মব্রণমস্নাবিরং শুদ্ধমপাপবিদ্ধম্।

কবির্মণীষী পরিভূঃ স্বয়ম্ভূর্যাথাতথ্যতোহর্থান ব্যদধাৎ

শাশ্বতীভ্যঃ সমাভ্যঃ।।

 দীপ্তিমন্ত সেই অশরীর অক্ষত শিরাহীন 

নির্মল নিষ্পাপ ঈশ্বরে সে যে পায় একদিন।

তিনি কবি তিনি মনীষী এবং প্রভু স্বয়ম্ভূ তিনি,

সকলের তরে যথাযথভাবে সকলি রাখেন যিনি।

 

 

যস্মিন সর্বাণি ভূতানি আত্মৈবাভূদ্ বিজানতঃ

তত্র কো মোহঃ কঃ শোক একত্বমনুপশ্যতঃ।।

 যে লোক সকল ভূতকে আপন দ্যাখে আত্মার মতো,

সেই একত্ব দেখিলে তাহার মোহ শোক হয় গত।

 

 

যস্তু সর্বাণি ভূতানি আত্মন্যেব অনুপশ্যতি।

সর্বভূতেষু চাত্মানং ততো বিজুগুপ্সতে।।

 যেজন সর্বভূতকে হেরিছে আপন আত্মা মাঝে,

এবং আপন আত্মাকে দেখেসকল ভূতেতে রাজে,

থাকে না তাহার কারো প্রতি কোনো ঘৃণা জুগুপ্সা কাজে।

 

তদেজতি তন্নৈজতি তদ্দূরে তদ্বন্তিকে।

তদন্তরস্য সর্বস্য তদু সর্বস্যাস্য বাহ্যতঃ।।

 তিনি চল তিনি অচল আবার দূরে সন্নিকটে,

তিনি সকলের অভ্যন্তরে আবার বাহিরে বটে।

 

অনেজদেকং মনসো জবীয় নৈনন্দেবা আপ্নুবন পূর্বমর্ষৎ

তদ্ধাবতোহন্যানতোতি তিষ্ঠং তস্মিন্নপো মাতরিশ্বা দধাতি।

 তিনি হন এক অচল হলেও মন হতে বেগবান

পায় না তাহারে পঞ্চেন্দ্রিয়, কোন নর ধাবমান

তিনি সব স্থানে বিরাজ করেন, গতায়াচ সব ঠাঁই,

আছেন বলিয়া বায়ু আপনার কাজ করে একাজই।

 

 

অসূর্যা নাম তে লোকা অন্ধেন তমসাবৃতাঃ।

তাংস্তে প্রেত্যাভি গচ্ছন্তি যে কে চাত্মহনো জনাঃ।।

 যারা করে থাকে আত্মহত্যা, মরণের পরে হায়

গভীর তমসাবৃত অসূর্যলোকে যায়।

 

 

কুর্বন্নেবেহ কর্মাণি জিজীবিষেৎ শতং সমাঃ

এবং ত্বয়ী নান্যথেতোহস্তি কর্ম লিপ্যতে নরে।

 কর্মসমূহ করিতে করিতে করো শতায়ুর সাধ

এতেই সিদ্ধি, কর্মমানবে নাহি আনে অবসাদ।

  

ঈশা বাস্য মিদংসর্বং যৎ কিঞ্চ জগত্যাং জগৎ

তেন ত্যক্তেন ভূঞ্জীথা মা গৃধঃ কস্যস্বিদ্ ধনম্

 যা কিছু স্থাবর আছে বিশ্বজগৎ মাঝে,

ঈশ্বর দ্বারা ঢাকা থেকে সবি নিত্য রাজে।

তাঁর দ্বারা যাহা লভিবে হেথায়, উপভোগ কর তাই।

অধিক ভোগের করো না বাসনা, নিজ ধন কারো নাই।

 

 

 

কোন মন্তব্য নেই: